খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টি সুরক্ষায় আধুনিক জীবপ্রযুক্তির ব্যবহার বিষয়ে প্রশিক্ষণ
Published:
22 September, 2019
Share:
খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টি সুরক্ষায় আধুনিক জীবপ্রযুক্তির ব্যবহার বিষয়ে প্রশিক্ষণ

কৃষিতে আধুনিক জীবপ্রযুক্তির ব্যবহার সম্পর্কে পুষ্টিবিদ ও চিকিৎসকদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ‘খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টি সুরক্ষায় কৃষিতে জীবপ্রযুক্তি প্রয়োগ’ শীর্ষক দিনব্যাপি এক প্রশিক্ষণ কর্মশালা অদ্য ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ রবিবার রাজধানীর বাংলাদেশ ফলিত পুষ্টি গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (বারটান) মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়েছে। কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারটান এর সহযোগিতায় পুষ্টিবিদ ও চিকিৎসকদের এই দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণের আয়োজন করে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ফার্মিং ফিউচার বাংলাদেশ (এফএফবি)।

গত কয়েক দশক ধরে কৃষিক্ষেত্রে আধুনিক জীবপ্রযুক্তির প্রয়োগের মাধ্যমে খাদ্যের মান উন্নয়ন, উৎপাদনের পরিমাণ বৃদ্ধি এবং উৎপাদন ব্যয় হ্রাসে ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে। জীবপ্রযুক্তির সঠিক প্রয়োগ পরিবেশগত এবং অর্থনৈতিক উভয়ই ক্ষেত্রেই টেকসই অবদান রেখে চলেছে। খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি ও খাদ্যের পুষ্টিমান উন্নয়নে জীবপ্রযুক্তির যথাযথ প্রয়োগের প্রয়োজনীয়তা অনুধাবনের ক্ষেত্রে সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এফএফবি বিশ্বাস করে, জীবপ্রযুক্তির মাধ্যমে উদ্ভাবিত ফসলের সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা অর্জনের ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারি পুষ্টিবিদ ও চিকিৎসকরা ব্যাপক অবদান রাখতে পারবেন। খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টি সুরক্ষায় কৃষিতে জীবপ্রযুক্তি প্রয়োগ’ শীর্ষক দিনব্যাপি এই প্রশিক্ষণে বারটানসহ বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞানী, পুষ্টিবিদ, শিক্ষক ও চিকৎসকগণ উপস্থিত ছিলেন।

আমাদের প্রয়োজনীয় খাদ্যে শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টির পরিমাণ বাড়াতে জীবপ্রযুক্তির প্রয়োগের মাধ্যমে উদ্ভাবিত (জিএম) ফসলের ব্যবহারের গুরুত্বের উপর জোর দিয়ে ঝর্না বেগম, অতিরিক্ত সচিব এবং এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর বলেন, “আমাদের কৃষিখাতে জীবপ্রযুক্তি ব্যবহারের অনেক সুযোগ রয়েছে। এই সুযোগগুলো কাজে লাগাতে হবে এবং এ সম্পর্কে জনসাধারনের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে জাতীয়ভাবে আরও অনেক উদ্যোগ গ্রহণের প্রয়োজন রয়েছে। কেননা, জিএম ফসল গণমানুষের পুষ্টি চাহিদা পূরণে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারে।

ড মোহাম্মদ আব্দুর রউফ, অতিরিক্ত সচিব, কৃষি মন্ত্রনালয়, বলেন, "আমাদের কৃষিখাতকে এগিয়ে নিতে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের নিয়ে জ্ঞান-বিনিময় এবং দক্ষতা বৃদ্ধির এই ধরনের সম্ভাবনাময় উদ্যোগে আমাদের আরো বেশি বিনিয়োগ করা প্রয়োজন।

ফার্মিং ফিউচার বাংলাদেশের সিইও এবং নির্বাহী পরিচালক মোঃ আরিফ হোসেন বলেন, আমরা পুষ্টিবিদ ও চিকিৎসকদের মতো মানুষের জীবনঘনিষ্ঠ পেশায় নিযুক্ত গুরুত্বপূর্ণ ও প্রভাবশালী মানুষদের সাথে নিয়ে কৃষিতে জীবপ্রযুক্তি ব্যবহারের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত সুবিধাগুলো সম্পর্কে জনমত গঠন ও প্রমাণ-ভিত্তিক তথ্য পরিবেশনের ক্ষেত্রে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি আরো বলেন, এই ধরনের কার্যক্রমের মাধ্যমে আমরা দেশের মানুষের পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে উন্নত পুষ্টিসমৃদ্ধ ফসলের ব্যবহার; বিশেষ করে আমাদের প্রধান খাদ্য ভাতে ভিটামিন এবং খনিজ সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রমের সুবিধা সম্পর্কে জনসাধারনের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করার ব্যাপারে অত্যন্ত আশাবাদী।

ফার্মিং ফিউচার বাংলাদেশ (এফএফবি) বিল ও মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন এর অর্থায়নে গঠিত একটি সমন্বিত যোগাযোগ উদ্যোগ, যাদের লক্ষ্য হল- বাংলাদেশের খাদ্যশস্য উৎপাদনে জীবপ্রযুক্তিসহ সকল ধরনের আধুনিক কৃষি প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধিতে সংশ্লিষ্ট পেশাজীবিদের দক্ষতা উন্নয়ন ও জনসাধারনের মধ্যে জনসচেতনতা বাড়ানো। ঢাকা-কেন্দ্রিক এই প্রতিষ্ঠানটি যুক্তরাষ্ট্রের কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান ‘কর্নেল এলায়ান্স ফর সায়েন্স’ এর সরাসরি তত্ত্বাবধানে ও পৃষ্ঠপোষকতায় কাজ করে আসছে।